পদার্থবিজ্ঞান ঠিকভাবে বোঝার জন্য যে কয়েকটি বিষয়ে সুস্পষ্ট ধারণা থাকতে হয় তার একটি হচ্ছে তরঙ্গ। এই অধ্যায়ে আমরা আমাদের পরিচিত যান্ত্রিক কয়েক ধরনের তরঙ্গের মাঝেই আমাদের আলোচনা সীমাবদ্ধ রাখব।
শব্দ এক ধরনের তরল। আমাদের দৈনন্দিন জীবনে শব্দের খুব বড় একটা ভূমিকা রয়েছে, তাই আমরা এই অধ্যায়ে শব্দ, শব্দের বেগ, শব্দের প্রতিধ্বনি এবং তার দূষণ নিয়েও আলোচনা করব।
একটা স্প্রিংয়ের নিচে একটা স্তর লাগিয়ে সেটা টেনে ছেড়ে দিলে এটা উপরে-নিচে করতে থাকে। (তৃতীয় এবং চতুর্থ অধ্যায়ে আমরা এই গতিটি ব্যাখ্যা করেছি।) আমরা দেখেছি ঘর্ষণের জন্য বা অন্যান্যভাবে শক্তি ক্ষয় হয় বলে এটা একসময় থেমে যায়। তা না হলে এটা অনন্তকাল উপর-নিচ করতে থাকত। আমরা এটাও দেখেছি সরল স্পন্দন গতিতে স্প্রিংয়ের সাথে লাগানো ভরটির শক্তি গতিশক্তি এবং বিভব শক্তির মাঝে বিনিময় করে এবং এসব ঘটে কারণ স্প্রিংয়ের বলটি হুক এর সূত্র মেনে চলে। হুকের সূত্রটি আবার মনে করিয়ে দেওয়া যায়, স্প্রিংয়ের ধ্রুব যদি হয় k, ভর যদি হয় m এবং অবস্থান যদি হয় x: তাহলে তার ওপর আরোপিত বল F হচ্ছে
হুকের সূত্রের কারণে যে ছন্দিত বা স্পন্দন গতি হয় সেটাকে বলে সরল স্পন্দন গতি। পদার্থবিজ্ঞানের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ গতিগুলোর একটি হচ্ছে এই গতি।
তোমাদের এই বইয়ে এটা বের করে দেখানোর সুযোগ নেই কিন্তু জানিয়ে রাখতে ক্ষতি কী? যদি একটা স্প্রিংয়ের খুব হয় k এবং ভর হয় m তাহলে ভরটির দোলনকাল হবে
যদি এটা স্প্রিং না হয়ে একটা সুতার ঝোলানো পেন্ডুলাম হতো এবং সুতার দৈর্ঘ্য হতো।আর মাধ্যাকর্ষণজনিত ত্বরণ হতো তাহলে দোলনকাল হতো:
(না, কোনো ভুল হয়নি, তুমি একটা হালকা ভরই ঝোলাও আর ভারী ভরই ঝোলাও দোলনকাল একই থাকবে, এটা ভরের ওপর নির্ভর করে না।)
একটা স্প্রিংয়ের নিচে একটা ভর লাগিয়ে রেখে দিলে ভরটা স্প্রিংটাকে টেনে একটু লম্বা করে সেই অবস্থানে স্থির হয়ে থাকে। স্প্রিংয়ের এই দৈর্ঘ্যটাকে বলা যায় সাম্য অবস্থা (চিত্র 7.010) |
এখন যদি ভরটাকে টেনে একটু নিচে a দূরত্ব নামিয়ে এনে ছেড়ে দিই (চিত্র 7.01-1) তাহলে ভরটা উপরের দিকে উঠতে থাকবে, সাম্য অবস্থা পার হয়ে এটা উপরে ৫ দূরত্বে উঠে যাবে, তারপর আবার নিচে নামতে থাকবে, সাম্য অবস্থা পার হয়ে নিচে নেমে যাবে এবং এটা চলতেই থাকবে।
ভরটা যখন 2 3 4 5 অবস্থান শেষ করে যে অবস্থানে শুরু করেছিল ঠিক একই অবস্থানে (6) একইভাবে ফিরে আসে (উপরের দিকে v বেগে গতিশীল) তখন আমরা বলি একটা পূর্ণ স্পন্দন হয়েছে। মনে রাখতে হবে 23 শেষ করে 4 এলেও কিন্তু যে অবস্থান থেকে শুরু করেছে সেই অবস্থানে ফিরে আসবে কিন্তু এটা পূর্ণ স্পন্দন নয় কারণ প্রথম 2 অবস্থানটিতে উপরের দিকে যাচ্ছে এবং পরের 4 অবস্থানটিতে নিচের দিকে যাচ্ছে, কাজেই এক অবস্থানে একইভাবে ফিরে আসা হলো না।
সরল স্পন্দন গতি বিশ্লেষণ করতে হলে আমাদের কয়েকটা রাশি ব্যাখ্যা করে নেওয়া ভালো। প্রথমটি হতে পারে পর্যায় কাল (Time Period) বা দোলনকাল T। একটা পূর্ণ স্পন্দন হতে যে সময় নেয় সেটা হচ্ছে পর্যায়কাল বা দোলনকাল। কম্পাঙ্ক f হচ্ছে প্রতি সেকেন্ড পূর্ণ স্পন্দনের সংখ্যা অর্থাৎ পর্যায়কাল T যদি সেকেন্ডে প্রকাশ করি তাহলে f এর একক হচ্ছে হার্টজ (Hz)।
সরল স্পন্দিত গতিতে বিস্তার হচ্ছে সাম্যাবস্থা থেকে সবচেয়ে বেশি উপরে ওঠা (কিংবা নিচে নামা ) দূরত্ব। 7.01 চিত্রে যেভাবে দেখানো হয়েছে সেখানে বিস্তার হচ্ছে a.
এর পরের রাশিটি হচ্ছে দশা (Phase), স্প্রিংয়ে লাগানো ভরটি যখন ওঠানামা করছে, তখন কোনো এক মুহূর্তে যদি ভরটির দিকে তাকাই তাহলে আমরা দেখব সেটি সাম্যাবস্থা থেকে কোনো একটি দূরত্বে থাকবে, সেই অবস্থানটি হচ্ছে তার দশা। সরল স্পন্দন গতিতে ভর এবং স্প্রিংয়ের এই নির্দিষ্ট অবস্থাটি হুবহু একইভাবে ফিরে আসবে আবার ঠিক এক পর্যায়কাল পরে। পদার্থবিজ্ঞানের ভাষায় বলা যায় সরল স্পন্দন গতিতে কোনো এক মুহূর্তে যে দশা হয় এক দোলনকাল পর আবার সেই দশা ফিরে আসে।
আমরা সবাই তরঙ্গ দেখেছি, একটা পানিতে ঢিল ছুড়ে দিলে সেই বিন্দু থেকে পানির তরঙ্গ চারদিকে ছড়িয়ে পড়ে। ঘরে বাতি জ্বালালে যে আলো ঘরে ছড়িয়ে পড়ে সেটাও তরঙ্গ। আমরা যখন কথা বলি আর শব্দটা যখন এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায় পৌঁছে যায় সেটাও তরঙ্গ। একটা স্প্রিংকে সংকুচিত করে ছেড়ে দিলে তার ভেতর দিয়ে যে বিচ্যুতিটি ছুটে যায় সেটাও তরঙ্গ, একটা টান করে রাখা দড়ির মাঝে ঝাঁকুনি দিলে যে বিচ্যুতিটি দড়ি দিয়ে ছুটে যায় সেটাও তরঙ্গ। এক কথায় বলা যায় তরঙ্গটি কী আমরা সেটা অনুভব করতে পারি, কিন্তু যদি তার জন্য পদার্থবিজ্ঞানের ভাষায় একটা সুন্দর সংজ্ঞা দিতে চাই তাহলে কী বলব?
সহজ ভাষায় বলা যায়, তরঙ্গ হচ্ছে একটা মাধ্যমের ভেতর দিয়ে এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায় শক্তি পাঠানোর একটা প্রক্রিয়া, যেখানে মাধ্যমের কণাগুলো তার নিজের অবস্থানে স্পন্দিত হতে পারে কিন্তু সেখান থেকে সম্পূর্ণ সরে যাবে না।
আমরা এবারে যাচাই করে দেখতে পারি আমাদের এই সংজ্ঞাটি আমাদের অভিজ্ঞতার সাথে মেলে কি না। নদীর মাঝখান দিয়ে একটা লঞ্চ যাবার সময় যে ঢেউ তৈরি করে সেই ঢেউ নদীর কূলে এসে আঘাত করে, কাজেই নিশ্চিতভাবে বলা যায় এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায় শক্তি পাঠানো হয়েছে। সেই সময়ে নদীর পানিতে ভাসমান কোনো কচুরিপানার দিকে তাকালে আমরা দেখব যখন ঢেউটি যাচ্ছে সেই মুহূর্তে কচুরিপানাটি উপরে উঠেছে এবং নিচে নেমেছে এবং ঢেউ চলে যাবার পর আবার আগের মতো স্থির হয়ে গেছে এবং মোটেও ঢেউয়ের সাথে সাথে তীরে এসে আছড়ে পড়েনি।
সরল স্পন্দন গতির সাথে তরঙ্গের সম্পর্কটা এখন নিশ্চয়ই তোমরা বুঝতে পারছ। একটা মাধ্যমের কোনো একটা নির্দিষ্ট বিন্দুর দিকে যদি আমরা তাকিয়ে থাকি তাহলে যখন তার ভেতর দিয়ে একটা তরঙ্গ যেতে থাকে তখন সেই বিন্দুটির সরল স্পন্দন গতি হয়। কচুরিপানার বেলায় যেটা ঘটেছিল, যতক্ষণ তার ভেতর দিয়ে পানির তরঙ্গটা গিয়েছে ততক্ষণ সেখানে সরল স্পন্দন গতি হয়েছে। সরল স্পন্দন গতির মাঝে তরঙ্গ নেই, কিন্তু তরঙ্গের প্রত্যেকটা বিন্দু একেকটা সরল স্পন্দন গতি।
কাজেই তরঙ্গের জন্য আমাদের দেওয়া সংজ্ঞাটি সঠিক। তবে মনে রাখতে হবে আরো অনেক ধরনের তরঙ্গ আছে যার জন্য এই সংজ্ঞাটি পুরোপুরি সঠিক নাও হতে পারে। আমরা তরঙ্গে যাবার জন্য একটা মাধ্যমের কথা বলেছি কিন্তু সূর্য থেকে আলো যখন পৃথিবীতে পৌঁছায় তখন তার জন্য কোনো মাধ্যমের প্রয়োজন হয় না। আলো হচ্ছে বিদ্যুৎ চৌম্বকীয় তরঙ্গ। সেটা নিয়ে নবম অধ্যায়ে আমরা আলোচনা করব। গ্র্যাভিটি ওয়েভ নামে এক ধরনের তরঙ্গের কথা বিজ্ঞানীরা বলছেন, যেটি মাত্র কিছুদিন হলো বিজ্ঞানীরা প্রথমবার দেখতে পেয়েছেন। তার জন্যও কোনো মাধ্যমের প্রয়োজন নেই। পদার্থবিজ্ঞানের চমকপ্রদ শাখা কোয়ান্টাম মেকানিক্সে ওয়েভ ফাংশন বলে অন্য এক ধরনের তরঙ্গের কথা বলা হয় সেটি আরো বিচিত্র, সেখানে সরাসরি তরঙ্গটি দেখা যায় না শুধু তার প্রতিক্রিয়া অনুভব করা যায়।
কাজেই আমরা আপাতত আমাদের আলোচনা সীমাবদ্ধ রাখব শুধু সেই সব তরঙ্গের মাঝে যার জন্য কঠিন, তরল বা গ্যাসের মতো মাধ্যমের দরকার হয়। এই ধরনের তরঙ্গের নাম যান্ত্রিক তরঙ্গ।
তরঙ্গ নিয়ে আলোচনা করার সময় তার কয়েক ধরনের বৈশিষ্ট্যের কথা উঠে এসেছে, এখানে আমরা তরঙ্গের, বিশেষ করে যান্ত্রিক তরঙ্গের সব বৈশিষ্ট্য নিয়ে আলোচনা করব।
(i) যান্ত্রিক তরঙ্গের জন্য মাধ্যমের দরকার হয়। পানিতে ঢেউ হয়, একটা স্প্রিংয়ে তরঙ্গ পাঠানো যায়, একটা দড়িতে তরঙ্গ সৃষ্টি করা যায়। আমরা যে শব্দ শুনি সেটাও একটা তরঙ্গ এবং তার মাধ্যম হচ্ছে বাতাস।
(ii) একটা মাধ্যমের ভেতর দিয়ে যখন তরঙ্গ যেতে থাকে তখন কণাগুলো নিজ অবস্থানে থেকে স্পন্দিত হয় (কাঁপে কিংবা ওপর-নিচে যায়) কিন্তু কণাগুলো নিজে তরঙ্গের সাথে সাথে সরে যায় না।
( iii) তরঙ্গের ভেতর দিয়ে শক্তি এক স্থান থেকে অন্য স্থানে যেতে পারে। শক্তি যত বেশি হয় তরঙ্গের বিস্তার তত বেশি হয়। শক্তি তরঙ্গের বিস্তারের বর্গের সমানুপাতিক। অর্থাৎ বিস্তার বদি দ্বিগুণ হয় শক্তি হয় চার গুণ।
(iv) সব তরঙ্গেই একটা বেগ থাকে সেই বেগ তার মাধ্যমের প্রকৃতির ওপর নির্ভর করে। বাতাসে শব্দের বেগ 330 m/s পানিতে এই বেগ 1493m/s। ঢিলে একটা দড়িতে একটা তরঙ্গের যত বেগ হবে টান টান করে রাখা দড়িতে হবে তার থেকে বেশি।
(v) তরঙ্গের প্রতিফলন কিংবা প্রতিসরণ হয়, পরের অধ্যায়ে আলোর জন্য এটি অনেক বড় করে আলোচনা করা হয়েছে। আপাতত জেনে রাখ এক মাধ্যম থেকে অন্য মাধ্যমে যাবার সময় তরঙ্গের খানিকটা যদি প্রথম মাধ্যমে ফিরে আসে সেটা হচ্ছে প্রতিফলন।তরঙ্গ যখন প্রথম মাধ্যম থেকে দ্বিতীয় মাধ্যমে যায় সেটা হচ্ছে প্রতিসরণ। আমরা যখন শব্দের প্রতিধ্বনি শুনি সেটা হচ্ছে শব্দের প্রতিফলন। পানিতে ডুবে থাকা অবস্থায় যদি বাইরের শব্দ শুনি সেটা হচ্ছে প্রতিসরণ।
(vi) তরঙ্গের যতগুলো বৈশিষ্ট্য আছে, তার মাঝে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বৈশিষ্ট্য হচ্ছে উপরিপাতন, যদিও আমাদের দৈনন্দিন জীবনে সেটা আমাদের খুব বেশি চোখে পড়ে না। ধরা যাক দুটি ভিন্ন ভিন্ন জায়গা থেকে এক জায়গার দুটি তরঙ্গ এসে হাজির হয়েছে। একটি তরঙ্গ যখন মাধ্যমটিকে উপরে তুলতে চেষ্টা করছে অন্যটি তখন তাকে নামানোর চেষ্টা করছে, তখন কী হবে? এগুলো হচ্ছে উপরিপাতনের বিষয়, যখন তরঙ্গের আরো গভীরে যাবে তখন বিষয়গুলো আরো ভালোভাবে জেনে যাবেদুটো তরঙ্গ একটি আরেকটিকে বড় করে দিতে পারে আবার একটি আরেকটিকে ধ্বংসও করে দিতে পারে।
একটা স্প্রিংয়ের ভেতর দিয়ে একটা তরঙ্গ যাবার সময় তরলটি স্প্রিংকে সংকুচিত এবং প্রসারিত করে এগিয়ে যায়। আবার একটা দড়ির এক প্রান্তে একটা ঝাঁকুনি দিয়ে একটা ভরণ তৈরি করে দড়ির মাঝে দিয়ে পাঠানো যার। দুটি তরঙ্গের মাঝে কিন্তু একটা মৌলিক পার্থক্য আছে। স্প্রিংয়ে তরঙ্গ হল সংকোচন এবং প্রসারণের, স্প্রিংটির সংকোচন এবং প্রসারণের দিক এবং তরঙ্গের বেগ একই দিকে। এই ধরনের তরঙ্গের নাম অনুদৈর্ঘ্য তরঙ্গ। শব্দ হচ্ছে এ রকম অনুদৈর্ঘ্য তরঙ্গ (Longitudinal wave)।
দড়ির বেলায় আমরা যখন দড়িটিতে ঝাঁকুনি দিয়ে তরঙ্গ তৈরি করেছি সেখানে দড়ির কম্পনটি কিন্তু তরঙ্গের বেগের দিকে ঘটে না। কম্পনের দিক অর্থাৎ দড়ির ওঠা এবং নামা, তরঙ্গের বেগের সাথে লম্ব। এরকম তরঙ্গের নাম অনুপ্রস্থ তরঙ্গ (Transverse wave)। পানির ঢেউ হচ্ছে এর একটি উদাহরণ।
সরল স্পন্দন গতিতে আমরা যে সকল রাশির কথা বলেছি তার সবগুলোই আসলে তরঙ্গের বেলা ব্যবহার করতে পারব। একটা তরঙ্গেরও পূর্ণ স্পন্দন হয়, তার পর্যায়কাল আছে, কম্পাঙ্ক আছে এবং বিস্তার আছে। আমরা দেখেছি কোনো একটা তরঙ্গ যাবার সময় আমরা যদি মাধ্যমের কোনো একটা কণার দিকে তাকিয়ে থাকি তাহলে দেখব সেই কণাটির সরল স্পন্দিত কম্পন হচ্ছে। তরঙ্গের বেলায় আমরা নতুন দুটি রাশির কথা বলতে পারি যার একটা হচ্ছে তরঙ্গ দৈর্ঘ্য। তরঙ্গের যেকোনো একটি দশা থেকে তার পরবর্তী একই দশার মাঝে দুরত্ব হচ্ছে তরঙ্গ দৈর্ঘ্য।অর্থাৎ এক পর্যায়কালে একটা তরঙ্গ যেটুকু দূরত্ব অতিক্রম করে সেটাই হচ্ছে তরঙ্গ দৈর্ঘ্য।
তরঙ্গের মাঝে দ্বিতীয় আরো একটি রাশি রয়েছে যেটা সরল স্পন্দিত কম্পনে নেই, সেটি হচ্ছে তরঙ্গের বেগ। প্রতি সেকেন্ডে একট তরঙ্গ যেটুকু দূরত্ব অতিক্রম করে সেটাই হচ্ছে তরঙ্গের বেগ । প্রতি সেকেন্ডে যে কয়টি পর্যায়কাল থাকে সেটি হচ্ছে কম্পাঙ্ক, কম্পাঙ্ক যদি f এবং তরঙ্গ দৈর্ঘ্য 𝜆 যদি হয় তাহলে বেগ হচ্ছে
একটা তরঙ্গ যখন একটা মাধ্যম থেকে অন্য মাধ্যমে যার তখন তার বেগের পরিবর্তন হয়, যেহেতু কম্পাঙ্ক সব সময় সমান থাকে তাই তরঙ্গ যখন এক মাধ্যম থেকে অন্য মাধ্যমে যায় তখন তার তরঙ্গ দৈর্ঘ্যের পরিবর্তন হয়। অর্থাৎ তরুণ বিভিন্ন মাধ্যমের ভেতর দিয়ে যাবার সময় তার তরঙ্গ দৈর্ঘ্য কিংবা বেগের পরিবর্তন হয় কিছু কম্পাঙ্কের বা পর্যায়কালের কখনো পরিবর্তন হয় না।
শব্দ তরঙ্গ তৈরি করতে তার একটা উৎসের দরকার, সেটাকে পাঠানোর জন্য একটা মাধ্যমের দরকার এবং সেই শব্দ গ্রহণ করার জন্য কোনো এক ধরনের রিসিভার দরকার। আমাদের চারপাশে অসংখ্য শব্দের উৎস রয়েছে। অবশ্যই সবচেরে পরিচিত উৎস আমাদের কণ্ঠ, সেখানে যে ভোকাল কর্ড আছে আমরা তার ভেতর দিয়ে বাতাস বের করার সময় সেখানে যে কম্পন হয় সেটা দিয়ে শব্দ তৈরি হয়। কথা বলার সময় আমরা যদি গলায় স্পর্শ করি তাহলে আমরা সেই কম্পনটা অনুভব করতে পারব।
তোমরা নিশ্চয়ই লক্ষ করেছ পুরুষের গলার স্বর মোটা এবং নারী ও শিশুদের গলার স্বর তীক্ষ্ণ। আমরা যখন কোনো একটা শব্দ করি তখন আমাদের ফুসফুস থেকে বাতাস গলা দিয়ে দিয়ে বের হয়ে আসে। আমাদের গলায় ফুসফুসে বাতাস ঢোকার জন্য এবং বের হওয়ার জন্য রয়েছে wind pipe এর উপরে শব্দ সৃষ্টি করার জন্য রয়েছে স্বরযন্ত্র (Larynx)। সেখানে দুটো পর্দা ভালভের মতো কাজ করে, এই পর্দা দুটির নাম ভোকাল কর্ড (vocal cord)। বাতাস বের করার সময় এগুলো কাঁপতে পারে এবং শব্দ তৈরি করে। বয়সের সাথে সাথে পুরুষের ভোকাল কর্ড শক্ত হয়ে যায়, মেয়েদেরটি কোমল থাকে। সে জন্য পুরুষেরা কম কম্পাঙ্কের শব্দ তৈরি করে মেয়েরা বেশি কম্পাঙ্ক তৈরি করে। যে কারণে পুরুষের পলার স্বর মোটা মেয়েদেরটি তীক্ষ্ণ।
আমাদের কণ্ঠ ছাড়াও স্পিকার শব্দের উৎস হিসেবে কাজ করে, সেখানে যে পাতলা ডায়াফ্রাম রয়েছে সেটিকে সুনির্দিষ্টভাবে কাঁপিয়ে শব্দ তৈরি করা হয়। স্কুলের ঘন্টার মাঝে আঘাত করলে সেটি কাঁপতে শুরু করে শব্দ তৈরি করে এবং তখন হাত দিয়ে সেটাকে চেপে ধরে কম্পন বন্ধ করে ফেলা যায়, সাথে সাথে শব্দও বন্ধ হয়ে যাবে। গিটারের তারে ঠোকা দিলে সেটি কাঁপতে থাকে এবং শব্দ তৈরি করে। ল্যাবরেটরিতে সুর শলাকা দিয়ে নির্দিষ্ট কম্পনে শব্দ তৈরি করা যায়।
কম্পন দিয়ে শব্দ তৈরি করার পর সেটিকে এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায় পাঠানোর জন্য একটা মাধ্যমের দরকার হয়। শব্দ তরল কিংবা কঠিন পদার্থের ভেতর দিয়েও পাঠানো যায় কিন্তু আমরা বাতাসকে মাধ্যম হিসেবে ব্যবহার করেই শব্দ শুনে অভ্যস্ত। মাধ্যম ছাড়া যে শব্দ যেতে পারে না সেটি দেখানোর জন্য ল্যাবরেটরিতে 7.02 চিত্রে দেখানো উপায়ে একটা জারে কলিং বেল রেখে সেটাকে বাইরে থেকে বিদ্যুৎ সরবরাহ করে বাজানো যেতে পারে। তারপর একটা পাম্প দিয়ে ধীরে ধীরে বায়ুশূন্য করা শুরু করলে কলিং বেলের শব্দ মৃদু হতে শুরু করবে। বেলজারটি পুরোপুরি বায়ুশূন্য করা হলে ভেতরে কলিং বেলটি বাজতে থাকলেও বাইরে থেকে মনে হবে সেটি কোনো শব্দ তৈরি করছে না।
আমরা আমাদের কান দিয়ে শব্দ শুনতে পাই। শব্দের কম্পাঙ্ক যদি 20 Hz থেকে 20,000 Hz বা 20Hz এর মাঝখানে থাকে তাহলে সেই শব্দ শোনা যায়। (তবে কানে হেডফোন লাগিয়ে অবিরত পান শুনে কিংবা প্রচণ্ড শব্দদূষণে থাকলে অনেক সময় শোনার ক্ষমতা কমে যায়।) শব্দের কম্পাঙ্ক 20 Hz থেকে কম হলে সেটাকে শব্দের বা ইনফ্রাসাউন্ড এবং 20kHz থেকে বেশি হলে সেটাকে শব্দোত্তর বা আলট্রাসাউন্ড বলে। 20 Hz থেকে কম কিংবা 20 kHz থেকে বেশি কম্পাঙ্ক তৈরি করা হলে সেটি বাতাসে যে আলোড়ন সৃষ্টি করবে আমরা সেটি শুনতে পারব না। এ ধরনের শব্দের অস্তিত্ব বুঝতে হলে আমরা বিশেষ ধরনের মাইক্রোফোন বা রিসিভার ব্যবহার করতে পারি। অনেক পশুপাখি কম কম্পাঙ্কের শব্দ শুনতে পায়। ভূমিকম্পের আগে আগে এ ধরনের কম কম্পাঙ্কের শব্দ তৈরি হয় এবং অনেক সময় পশুপাখি সেই শব্দ শুনে অভিে ছোটাছুটি করেছে সে ধরনের ঘটনা ঘটেছে বলে জানা গেছে।
শব্দ একটি যান্ত্রিক তরঙ্গ কারণ বস্তুর কম্পনের ফলে শব্দ তরঙ্গ সৃষ্টি হয় এবং সেটি সঞ্চালনের জন্য স্থিতিস্থাপক মাধ্যমের দরকার হয়। এটি একটি অনুদৈর্ঘ্য তরঙ্গ কারণ এই তরঙ্গের প্রবাহের দিক এবং কম্পনের দিক এক। শব্দ তরঙ্গের বেগ মাধ্যমের প্রকৃতির উপর নির্ভর করে, বায়বীয় মাধ্যমে এর বেগ কম, ভরলে তার চেয়ে বেশি, কঠিন পদার্থে আরো বেশি। শব্দের বেগ মাধ্যমের তাপমাত্রা এবং আর্দ্রতার উপরও নির্ভর করে। শব্দের তীব্রতা অন্যান্য তরঙ্গের মতো তার বিস্তারের বর্গের সমানুপাতিক। অর্থাৎ তরঙ্গের বিস্তার বেশি হলে শব্দের তীব্রতা বেশি হবে এবং তরঙ্গের বিস্তার কম হলে শব্দের তীব্রতা কম হবে। যেকোনো তরঙ্গের মতোই শব্দ তরঙ্গের প্রতিফলন, প্রতিসরণ এবং উপরিপাতন হতে পারে।
শব্দ যেহেতু এক ধরনের তরঙ্গ তাই তার প্রতিফলন হতে পারে। সাধারণত বড় ফাঁকা দালানের ভেতর কথা বললে এক ধরনের গমগম আওয়াজ হয়, সেটি প্রতিফলন ছাড়া আর কিছু নয়। দালানের ভেতর দূরত্ব বেশি নয় বলে শব্দটা আলাদাভাবে শুনতে পাই না। আমরা যখন কিছু শুনি তার অনুভূতিটা 0.1s পর্যন্ত থেকে যায় তাই দুটি শব্দ আলাদাভাবে শুনতে হলে দুটি শব্দের মাঝে কমপক্ষে 0.1s এর একটা ব্যবধান থাকা দরকার। শব্দের বেগ 330 m/s কাজেই 0.1s এর ব্যবধান তৈরি করতে শব্দকে কমপক্ষে 33 m দূরত্ব অতিক্রম করতে হয়। একটি বড় দেয়াল, দালান কিংবা খাড়া পাহাড়ের সামনে কমপক্ষে এই দূরত্বের অর্ধেক দূরত্বে ( 16.5m) দাঁড়ালে শব্দটি গিয়ে প্রতিফলিত হয়ে ফিরে আসতে 0.1s সময় লাগবে এবং আমরা শব্দের প্রতিধ্বনি শুনতে পাব।
বাদুড়ের চোখ আছে এবং সেই চোখে বেশ ভালো দেখতে পায়, তারপরও তারা ওড়ার সময় শব্দের প্রতিধ্বনি ব্যবহার করে। বাদুড় গুড়ার সময় তার কণ্ঠ থেকে শব্দ তৈরি করে, সামনে কোনো কিছু থাকলে শব্দটি সেখানে প্রতিফলিত হয়ে ফিরে আসে, কতক্ষণ পর শব্দটি ফিরে এসেছে সেখান থেকে বাদুড় দূরত্বটা অনুমান করতে পারে। এ জন্য অন্ধকারেও বাদুড় কোথাও ধাক্কা না খেয়ে উড়ে যেতে পারে। বাদুড়ের তৈরি এই শব্দ আমরা শুনতে পাই না, কারণ শব্দটি আলট্রাসাউন্ড অর্থাৎ আমাদের শোনার বাইরের কম্পাঙ্কের শব্দ। বাদুড় প্রায় 100 kHz কম্পনের শব্দ তৈরি করতে পারে।
বাতাসে শব্দের বেগ তাপমাত্রার বর্গমূলের সমানুপাতিক। অর্থাৎ
এখানে তাপমাত্রা কিন্তু সেলসিয়াস তাপমাত্রা হয়। কেলভিন স্কেলে তাপমাত্রা শব্দের বেগ বাতাসের চাপের ওপর নির্ভর করে না। তবে বাতাসের ঘনত্বের বর্গমূলের ওপর ব্যস্তানুপাতিকভাবে নির্ভর করে। তাই বাতাসে জলীয়বাষ্প থাকলে বাতাসের ঘনত্ব কমে যায়, সে জন্য শব্দের বেগ বেড়ে যায়।
শব্দ একটি যান্ত্রিক তরঙ্গ। এটি মাধ্যমের স্থিতিস্থাপকতার ওপর নির্ভর করে। তরল এবং কঠিন পদার্থের প্রকৃতি বাভাস থেকে ভিন্ন এবং স্বাভাবিক কারণেই শব্দের বেগ সেখানে ভিন্ন। তরলে শব্দের বেগ বাতাস থেকে বেশি এবং কঠিন পদার্থে শব্দের বেগ তরল থেকেও বেশি। 7.01 টেবিলে বিভিন্ন মাধ্যমে শব্দের বেগ দেখানো হয়েছে।
মাধ্যম | m/s |
বাতাস | 330 |
হাইড্রোজেন | 1,284 |
পারদ | 1,450 |
পানি | 1,493 |
লোহা | 5,130 |
হীরা | 12,000 |
শব্দের প্রচলিত ব্যবহারের কথা নিশ্চয়ই আর কাউকে আলাদা করে বলতে হবে না, আমরা কথা বলি, গান শুনি, ডাক্তাররা হৃৎস্পন্দন শোনেন, ইঞ্জিনিয়াররা যন্ত্রপাতির শব্দ শোনেন ইত্যাদি ইত্যাদি। শব্দের আরো কিছু ব্যবহার আছে, যার কথা তোমরা হয়তো শোনোনি। সন্তানসম্ভবা মায়ের গর্ভে যে নবজাতকটি বড় হয় বাইরে থেকে তাকে দেখার কোনো উপায় ছিল না, এখন আলট্রাসনোগ্রাফি নামে একটি প্রক্রিয়ায় সেটি দেখা সম্ভব হয়। শেষ অধ্যায়ে সেটি আলোচনা করা হয়েছে।
মাটির নিচে গ্যাস বা তেল আছে কি দেখার জন্য সিসমিক সার্ভে করা হয়। এটি করার জন্য মাটির খানিকটা নিচে ছোট বিস্ফোরণ করা হয়, বিস্ফোরণের শব্দ মাটির নিচের বিভিন্ন স্তরে আঘাত করে প্রতিফলিত হয়ে উপরে ফিরে আসে। জিওফোন (Geophone) নামে বিশেষ এক ধরনের রিসিভারে সেই প্রতিফলিত তরঙ্গকে ধারণ (Detect) করা হয়। সমস্ত তথ্য বিশ্লেষণ করে মাটির নিচের নিখুঁত ত্রিমাত্রিক ছবি বের করে কোথায় গ্যাস বা কোথায় তেল আছে তা বের করে নেওয়া হয়। শব্দের উৎসটি কোথায় আছে এবং জিওফোন কোথায় আছে দুটিই জানা থাকার কারণে উৎস থেকে জিওফোনে শব্দ আসতে কতটুকু সমর লেগেছে জানতে পারলেই বিভিন্ন স্তরের দূরত্ব নিখুঁতভাবে বের করা যায়।
ল্যাবরেটরিতে যখন ছোটখাটো যন্ত্রপাতি নিখুঁতভাবে পরিষ্কার করতে হয় তখন আলট্রাসাউন্ড ক্লিনার ব্যবহার করা হয়। এখানে কোনো একটি তরলে ছোটখাটো যন্ত্রপাতি ডুবিয়ে রেখে তার ভেতর আলট্রাসাউন্ড পাঠানো হয়, তার কম্পনে যন্ত্রপাতির সব ময়লা বের হয়ে আসে।
আমাদের চারপাশে নানা ধরনের শব্দ রয়েছে তার মাঝে কিছু কিছু শব্দ শুনতে আমাদের ভালো লাগে আবার কিছু কিছু শুনতে আমাদের ভালো লাগে তার মাঝে সবচেয়ে প্রধান হচ্ছে বিভিন্ন বাদ্যযন্ত্রের শব্দ।সুরশলাকা বা টিউনিং কর্ক থেকে নিখুঁত একটি কম্পনের শব্দ বের হয়। কিন্তু সুরযুক্ত শব্দে শুধু একটি তরঙ্গ থাকে না, একাধিক তরঙ্গ পরস্পরের ওপর উপস্থাপন করে শব্দটাকে সুরেলা করে তোলে।
সুরেলা শব্দকে ব্যাখ্যা করার জন্য অনেকগুলো বৈশিষ্ট্য সংজ্ঞায়িত করা হয়েছে তার মাঝে গুরুত্বপূর্ণ তিনটি হচ্ছে
তীব্রতা (Intensity): একটি সুরেলা শব্দ কত জোরে শোনা যাচ্ছে তার পরিমাণ হচ্ছে তীব্রতা। অর্থাৎ একক ক্ষেত্রফল দিয়ে প্রতি সেকেন্ডে যে পরিমাণ শব্দ শক্তি যায় তাকে শব্দের তীব্রতা বলে। শব্দের তীব্রতার একক হচ্ছে
তীক্ষ্ণতা (Pitch): সুরযুক্ত শব্দের যে বৈশিষ্ট্য দিয়ে একই তীব্রাকার শব্দকে কখনো মোটা কখনো তীক্ষ্ণ শোনা যার তাকে তীক্ষ্ণতা বা পিচ বলে। তীক্ষ্ণতার একক হচ্ছে Hz।
টিম্বার (Tibre): ভিন্ন ভিন্ন বাদ্যযন্ত্র থেকে আসা শব্দের পার্থক্য যে বৈশিষ্ট্য দিয়ে বোঝা যায় সেটা হচ্ছে টিম্বার বা সুরের গুণ।
সুরেলা শব্দ তৈরি করার জন্য নানা ধরনের বাদ্যযন্ত্রের ব্যবহার করা হয়, সেগুলোকে মোটামুটি তিন ভাগে ভাগ করা যায় :
তার দিয়ে তৈরি বাদ্যযন্ত্র: একতারা, বেহালা, সেতার
বাতাসের প্রবাহ দিয়ে তৈরি বাদ্যযন্ত্র: বাঁশি, হারমোনিয়াম
আঘাত (Percussion) দিয়ে শব্দ তৈরি করার বাদ্যযন্ত্র: ঢোল, তবলা
আজকাল ইলেকট্রনিকস ব্যবহার করে সম্পূর্ণ ভিন্ন উপায়ে সুরেলা শব্দ তৈরি করা হয়।
জীবনের অনেকটুকুর গুরুত্বটুকু ধরতে পারি । এটি বলার অপেক্ষা রাখে না শব্দদূষণের কারণে আমাদের শোনার ক্ষমতার অনেক ক্ষতি হয়। সমস্যাটি বাড়িয়ে তোলার জন্য আমাদের অনেকে অপ্রয়োজনেও কানে হেডফোন লাগিয়ে গান শোনে।
শব্দদূষণ কমানোর জন্য প্রথম প্রয়োজন দেশে এর বিরুদ্ধে আইন তৈরি করা যেন কেউ শব্দদূষণ করতে না পারে এবং করা হলে তার বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া যায়। এরপর প্রয়োজন জনসচেতনতা। সবাইকে বিষয়টি বোঝাতে হবে, যথাসম্ভব কম হর্ন ব্যবহার করে চলাচল, কলকারখানায় শব্দ শোষণের যন্ত্র চালু, মাইকের ব্যবহার কমিয়ে কিংবা বন্ধ করে দেওয়া, কম শব্দের যানবাহন ব্যবহার ইত্যাদি। একই সাথে শহরের ফাঁকা জায়গায় প্রচুর গাছ লাগিয়ে শব্দকে শোষণ করার মতো ব্যবস্থাও নেওয়া উচিত।
জেট ইঞ্জিন |
110-140 db |
ট্রাফিক |
80-90 db |
গাড়ি |
60-80 db |
টেলিভিশন |
50-60 db |
কথাবার্তা |
40-50 db |
নিঃশ্বাস |
10 db |
মশার পাখার শব্দ |
0 db |